SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

পঞ্চম শ্রেণি (ইবতেদায়ী) - বিজ্ঞান - আমাদের জীবনে প্রযুক্তি | NCTB BOOK

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পার্থক্য

বিজ্ঞান হলো প্রকৃতি সম্পর্কিত জ্ঞান যা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাকৃতিক ঘটনাকে ব্যাখ্যা এবং বর্ণনা করে। প্রাকৃতিক ঘটনা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করেন। যার মধ্যে নিম্নোক্ত ধাপসমূহ রয়েছে।

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি

ধাপসমূহবিবরণ
পর্যবেক্ষণআমাদের চারপাশের পরিবেশ পর্যবেক্ষণ করার মধ্য দিয়ে আমরা প্রাকৃতিক ঘটনা কিংবা নিজের | পছন্দের কোনো বিষয় সম্পর্কে কৌতুহল বোধ করি ।
প্রশ্নকরণযখন আমরা কোনো কিছু দেখি, শুনি বা পড়ি আমাদের মনে এ সম্পর্কিত নানা প্রশ্ন আসতে পারে। এ | সকল প্রশ্ন থেকে এমন একটি প্রশ্ন বেছে নেই যার উত্তর পর্যবেক্ষণ বা পরীক্ষণের মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব।
অনুমান পূর্ব অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে প্রশ্নটির সম্ভাব্য উত্তর ঠিক করি এবং খাতায় লিখি। এটিই অনুমান 
পরীক্ষণঅনুমানটি সঠিক কি না তা যাচাই করার জন্য একটি পরীক্ষার পরিকল্পনা করি। পরীক্ষাটি করার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করি। পরীক্ষাটি সম্পাদন করি। তথ্য সংগ্রহ করে পরীক্ষার | ফলাফল লিপিবদ্ধ করি।
সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করি এবং ফলাফলের সারসংক্ষেপ করি। ফলাফলটি অনুমানের সাথে মিলেছে কিনা তা যাচাই করি।
বিনিময় প্রাপ্ত ফলাফল এবং গৃহিত সিদ্ধান্ত অন্যদের সাথে বিনিময় করি ।

প্রযুক্তি হলো আমাদের জীবনের বাস্তব সমস্যা সমাধানের জন্য বিজ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ। প্রযুক্তি মানুষের জীবনের মানোন্নয়নে বিভিন্ন পণ্য, যন্ত্রপাতি এবং পদ্ধতির উদ্ভাবন করে। যেমন— বিজ্ঞানীরা বিদ্যুৎ নিয়ে গবেষণা করে এ সম্পর্কে আমাদের ধারণা বা জ্ঞান সৃষ্টি করেছেন। এই বৈজ্ঞানিক জ্ঞান আবার ফ্রিজ, টেলিভিশন, মোবাইল এবং বৈদ্যুতিক বাতি উদ্ভাবনে কাজে লাগানো হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহারের নানান ক্ষেত্র রয়েছে। যেমন— শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ, যাতায়াত ইত্যাদি।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্পর্ক

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উদ্দেশ্য ভিন্ন হলেও আমাদের জীবনে এদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এরা পরস্পরের সাথে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত।

অতীতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্পর্ক এত নিবিড় ছিল না। বিজ্ঞানীরা প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করেছেন এবং বিভিন্ন ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেখানে ব্যবহারিক জীবনের সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। তাঁরা বিদ্যুৎ এবং আলোর মতো বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক জ্ঞান আবিষ্কার করেছেন। অপরদিকে, জীবনকে উন্নত করার লক্ষ্যে বাস্তব সমস্যা সমাধানের জন্য মানুষ প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে। তারা পাথরের হাতিয়ার, আগুন, পোশাক, ধাতব যন্ত্রপাতি এবং চাকার মতো সরল প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে।

আঠারো শতকে শিল্পবিপ্লবের সময়কালে প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বিশেষ করে কৃষি, শিল্পকারখানা, পরিবহন ইত্যাদি ক্ষেত্রে। বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত জলীয় বাষ্পের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে মানুষ বাষ্পীয় ইঞ্জিন উদ্ভাবন করেছে। এই বাষ্পীয় ইঞ্জিন কলকারখানা, রেলগাড়ি ও জাহাজ চালাতে ব্যবহার করা হতো।

বিভিন্ন পণ্য এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবনে মানুষ বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ব্যবহার করে থাকে। বিজ্ঞানীরা প্রকৃতি নিয়ে গবেষণার সময়ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকেন। যেমন— দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে বিজ্ঞানীরা মহাকাশের বিভিন্ন বস্তু পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। খালি চোখে দেখা যায় না এমন জিনিস অনুসন্ধানে বিজ্ঞানীরা অণুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করে থাকেন। বর্তমানকালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি একে অপরের উপর নির্ভরশীল।

Content added By

আরও দেখুন...

Promotion

Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.